শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩০ অপরাহ্ন

গুজবের রকমফের–বাসন্তী থেকে বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টা মিয়ান আরাফি একই সূত্রেগাঁথা

গুজবের রকমফের–বাসন্তী থেকে বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টা মিয়ান আরাফি একই সূত্রেগাঁথা

গুজবের

কবি শেখ হাবিবুর রহমান বাবু

কালের গুজব ইতিহাসের সেই বাসন্তীরে জাল পরিয়ে বিশ্বেদরবারে তোলেধরার ষড়যন্ত্র, অথচ শাড়ির চেয়ে জালের দাম কয়েকগুণ বেশি ছিল তখন–সেই টেবলেট অনেক বাঙ্গালি দীর্ঘ দিন খেল,এখনো খায়! আওয়ামীলীগ হিন্দুর দল,ক্ষমতায় এলে মসজিদে উলুধ্বনি হবে,ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিবে—সেই টেবলেটও বহুদিন অনেক বাঙ্গালি খেল, এখনো অনেকে খায়।
আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলে লাউএর জাউ খাবে,মানুষ না খেয়ে মরবে,কৃষক সার পাবে না—সেই টেবলেটও অনেক বাঙ্গালি খেল! কুত্তার মাথায় টুপি দিয়ে আওয়ামীলীগকে ইসলাম বিরোধী বানিয়ে নির্বাচনেও জিতল! কিন্তু এক সময় মানুষ বা বাঙ্গালিরা তাদের ভুল বুঝতে পারে কিন্তু ততদিনে জনগণের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়—বাসন্তীর জাল পরানো ছবি ষড়যন্ত্র ছিল,আওয়ামীলীগ শুধু হিন্দুর দল সেটা ষড়যন্ত্র ছিল। আওয়ামীলীগ হিন্দু-বৌদ্ধ- খ্রিষ্টান মুসলমান সকল ধর্মের মানুষের রাজনৈতিক দল,সকল ধর্মের মানুষ এখানে সমান সুযোগ পায়,মসজিদে উলুধ্বনি হয়না–মন্দিরে হয়,ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দেয়নি কারণ দেশ বিক্রি করা যায় না–দেশ আমাদের মা,মাকে বিক্রি করা যায় না।
লাউ এর জাউ খেতে হয়না লাউ এর তরকারি দ্বারা সাধারণ মানুষও পেট ভরে ভাত খায়,উত্তরাঞ্চলের মঙ্গা দূর হয়েছে,দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে,মানুষের হাতেহাতে দামী মোবাইল শোভা পাচ্ছে,ঘরে ফ্রিজ,কালার টিভি,ডিশ চলে!

আরও পড়ুন: দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবেলা করেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি

এমন কোন মানুষ নেই যে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সুফল পাচ্ছে না,ভিক্ষুকের হাতে মোবাইল শোভা পায়–এসব মানুষের সক্ষমতার ফল,এটা সম্ভব হয়েছে আওয়ামীলীগ নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আর তাঁর সুযোগ্য পুত্র তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সত্যিকারের দেশপ্রেমিক সজীব ওয়াজেদ জয়ের বদৌলতে আর তাঁদের সুযোগ্য নেতৃত্বের ফলে! যে দেশে বিদ্যুতের ব্যাপক ঘাটতি ছিল কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে শুধু খাম্বা উৎপাদন করে জনগণকে অন্ধকারে রেখেছিল ধর্মের ধুয়া তোলা বকধার্মিক ষড়যন্ত্রের কারিগরদের দল জামাত বিএনপি —কিন্তু আজ দেশের ঘরেঘরে বিদ্যুতের দ্যোতি ছড়িয়ে দিচ্ছে সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিঁনি ষড়যন্ত্রকারীদের বারংবার হত্যার  জাল ছিন্ন করে বেঁচে উঠেছেন!বাঁচানোর মালিক মহান স্রষ্টা, তাঁকে মহান আল্লাহই জনগণের সেবা ও দেশের উন্নয়নের জন্য বাঁচিয়ে রেখেছেন।

ষড়যন্ত্রের রকমফের:–
পাকিস্তানের বর্বর আর শোষণের নিপীড়ন থেকে এ জাতিকে মুক্তির অমল স্বাদ এনে দিয়েছেন বিশ্বের অদ্বিতীয় অনন্য অসাধারণ মহান নেতা স্মরণাতীত কাল থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, রাজনীতির মহাকবি, রাজনীতির শ্রেষ্ঠ দার্শনিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।এই স্বাধীনতা এনে দিতে যিঁনি প্রায় ৫৪বছরের ক্ষুদ্র জীবন ১৪বছর জেলে কাটিয়েছেন, তাঁকে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা সপরিবারে নির্মম পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হত্যাকরল!এই হত্যাকাণ্ডটির পরিকল্পনা একদিনে হয় নি—পাকিস্তানী কারাগারে রেখে যেমন হত্যা করতে চেয়েছিল তেমনি আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসিয়েও হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিল কিন্তু তখন ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি মিলে তেমনটা সাহস দেখাতে পারেনি!বঙ্গবন্ধু যখন সাম্রাজ্যবাদী শোষণের বিরুদ্ধে উচ্চকিত হলেন তখনই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির টার্গেটে পরিণত হলেন।
৭০এর অভূতপূর্ব জয়ের পরও যখন ন্যায্য ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি তখন বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রজ্ঞা দ্বারাই কারও দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে কালজয়ী স্বাধীনতার মর্মবাণী অর্থাৎ ৭মার্চে রচনা করলেন একটি মহাকাব্য, এক মহাকাব্যিক উদগাঁথা বাংলার স্বাধীনতা, ঘোষিত হল কৌশলগত স্বাধীনতার ঘোষণা —নেমে এল ২৫মার্চের কালরাত্রি, ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ –যা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মানবতা লঙ্ঘনের জঘন্যতম উদাহারণ!
এত বড় জঘন্যতম মানবতালঙ্ঘনকারী বর্বর পাকিস্তানের প্রধান আন্তঃর্জাতিক কোলাবোরেটর আজকের সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যারা প্রত্যক্ষ ভাবে এই পাকিস্তানকে সমর্থন ও সাহায্য করেছিল,বিজয়ের প্রাক্কালে বিজয়কে নস্যাৎ করতে যুক্তরাষ্ট্র ৭ম নৌবহরের ২০টি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে ছিল;কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের পাল্টা হুমকীতে লেজগুটিয়ে ছিল তারা–সেই পরাজয়ের গ্লানি ভুলতে না পেরে স্বাধীন বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বাঁধাগ্রস্ত করতে স্বাধীনতার পর হেনরি কিসেঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি আখ্যায়িত করল,বঙ্গবন্ধু সরকারকে অজনপ্রিয় করতে ৭৪এর দুর্ভীক্ষ ঘটাল,আর পাকিস্তান পন্থী এদেশীয় গোষ্ঠিকে বিশেষ করে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনে ঘাপটি মারা পাকিস্তানপন্থী অফিসারদেকে মদদ দিতে লাগল—অবশেষে ১৫আগস্ট ঘটাল সেই কাঙ্ক্ষিত  জঘন্যতম মানবতাবাদী অপরাধ –একটি জাতিস্বত্বা সৃষ্টির জনককে হত্যাকরল যারা সেই কুলাঙ্গারদের সঙ্গি হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা এখন আর দলিল দিয়ে বুঝাতে হয় না!
এই ১৫আগস্টের হত্যাকারীদেরকে যুক্তরাষ্ট্র আশ্রয় প্রশ্রয় দিল তখন মানবতা লঙ্ঘন হয়নি,যারা হত্যাকাণ্ড ঘটাল,এই হত্যাকাণ্ডের মূল বেনিফিসিয়ারি জামাত বিএনপিকে মদদ দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র তখন মানবতা লঙ্ঘন হয়নি,আইন করে বিচার করাকে যেই সরকার বন্ধ করেছিল তখন কিন্তু সেই সাম্রাজ্যবাদী দানব মানবতা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে টু শব্দটি উচ্চারণ করেনি!!
২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় যে মানবতা লঙ্ঘন হয়েছিল সে সময় পাকিস্তানপন্থী জামাত বিনএপি সরকারকে মানবতা লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করেনি!
আবার যুক্তরাষ্ট্র যে জঙ্গিবাদ বিরোধী আদর্শ লালন করে তাদের দ্বারাই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত র‍্যাব যখন জঙ্গি দমন করল তখন র‍্যাব অনেক ভালছিল–তাহলে এখন কেন হঠাৎ করে এই র‍্যাবের কয়েকজন চৌকশ উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা খেয়ে লবিস্টের বদৌলতে র‍্যাবকে বিতর্কিত করতে এল?–এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের উন্নয়ন, উন্নয়ন কৌশলে তাদের খবরদারী না মানা,চীন, রাশিয়ার দিকে অর্থনৈতিক ভাবে একটু ঝুঁকে যাওয়া,একাত্তরের পরাজয়ের গ্লানি ইত্যাদি স্বার্থের কারণে বাংলাদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের উচ্চ পর্যায়ের লবিং, মায়াকান্না ও ভবিষ্যতে কোন গোপন সুবিধা প্রদানের আশ্বাস ইত্যাদি অনুঘটক হিসাবে কাজ করছে এই আওয়ামীলীগ সরকারবের বিরুদ্ধে। কিন্তু তারা এও বুঝতে পারছে যে এই সরকার বাংলাদেশকে এমন এক সক্ষমতা অর্জন করে দিয়েছে যা দ্বারা বদলে গেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশের গণ্ডি পেরিয়ে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে এবং ৪১সালে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের কাতারে সামিল হবে এতে তাদের ও তাদের দোসরদের ভাল লাগছে না, তাই আবার নিত্যনতুন ষড়যন্ত্রের নাটক এনে মঞ্চস্থ করে।
অতিসম্প্রতি রাজনৈতিক ভাবে প্রলাপী একজন ব্যক্তি বিএনপির চেয়ারপার্সনকে আরও নিচে নামাতে ভুয়া কোন কোম্পানির ২০১৮/১৯সালে দেয়া ফরমাইশি এক স্বাক্ষর ছাড়া মাদার অব ডেমোক্রেসির তকমা লাগাতে গিয়ে নতুন হাস্যরসের জন্মদিল ! এর পূর্বে  বেগম খালেদা জিয়ার কয়েকটি জন্মদিনের সৃষ্টি করে শেষমেশ ১৫আগস্টে ঘটাকরে নির্জলজ্জের মত জম্মদিন পালনের নাটক করে–এগুলি রাজনৈতিক দুর্ভীক্ষের পরিচয় এনে দিল,যা বেগম খালেদা জিয়াকে আরও নিচে নামিয়ে আনল!
করোনা থেকে রক্ষাকারী টিকা নিয়ে বিএনপি ও তার নেতাকর্মীরা নানান অপপ্রচার করে পরবর্তীতে তারাই লাইনে দাঁঁড়িয়ে টিকা নিচ্ছে আবার সমালোচনাও করছে।আসলে আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়নে একদল মানুষের গাত্রদাহ হচ্ছে!
তাদের দলের একজন নেতারা লন্ডন বসে বিলাসী জীবন যাপন করছে অথচ কোন কর্ম করছে না,নির্দিষ্ট কোন আয়ের পথ নেই আবার বিলাসী জীবন প্রশ্ন আসতেই পারে!
সর্বশেষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এক ভাষণে জাতীয় অর্থনীতির সংক্ষিপ্ত একটি সুচক তোলে ধরেছিলেন–এই মহামারী কালেও বাংলাদেশের গড় মাথাপিছু আয় প্রায়২৫৯১ ডলার,জিডিপির প্রবৃদ্ধি প্রায় ৬.৮১প্রায়,২০২০-২১অর্থবছরে মোট জিডিপির পরিমাণ প্রায় ৪১৬বিলিয়ন ডলার!
অন্যদিকে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ দক্ষিণ এশিরয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল:-
বৈদেশিক ঋণের তুলনামূলক চিত্রে তখন যে চিত্রটি তখন আমরা পেয়েছিলাম তা দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের তুলনামূলক অবস্থান ছিল নিম্নরূপ :–
বাংলাদেশ
বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ২৬ বিলিয়ন ডলার ।

শ্রীলঙ্কার ছিল
বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ  ৪৬ বিলিয়ন ডলার ।

ভারতের ছিল
বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ  ১২০ বিলিয়ন ডলার ।

পাকিস্তানের ছিল

বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ  ৫৫৭ বিলিয়ন ডলার!

সম্প্রতি বাংলাদেশকে যিনি তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বদলে দিলেন সেই সজীব ওয়াজেদ জয়কে বিতর্কিত করতে আবার তার বিরুদ্ধে এক ফোনালাপ ফাঁস করে তাঁকে বিতর্কিত করার পাঁয়তারা করেছে।সজীব ওয়াজেদ জয় যখন তাঁর মায়ের জন্মদিন পালন করে তখনো এদেশে গুজবের কারিগরেরা নানান অবাস্তব অলীক কাহিনী বানাচ্ছে। বলছিলাম সজীব ওয়াজেদের জয়ের ফোনালাপ নিয়ে যে গুজব ছড়াচ্ছিল তার কথা–
আসলে তারা ফোনাপের অর্থই বুঝেনি!বুঝতে হবে যে ফোনালাপ মানেই খারাপ না,সেটা যদি ষড়যন্ত্রের ফোনালাপ না হয়ে দেশের উন্নয়নের ফোনালাপ হয় তবে সেটা মঙ্গলজনক।
সংক্ষিপ্ত পরিসরে একটি কবিতায় তোলে ধরতে চাই সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান উন্নয়ন পরিস্থিতি :–

কবিতা:
উন্নয়নের মানস কন্যা”

দেশ দিয়েছে বঙ্গবন্ধু
অমর স্বাধীনতা
মানবতার মহাননেত্রী!
দেশরত্ন শেখ হাসিনা,
তোমার হাতেই গণতন্ত্র
উন্নয়নের মন্ত্র,
ধবংস করেছে
দেশদ্রোহীদের
সকল ষড়যন্ত্র।
গণতন্ত্র মানে
দেশের উন্নতি
অর্থনেতিক মুক্তি,
মানিনা মোরা
ষড়যন্ত্রীদের
কোন খুঁড়া যুক্তি।
ধর্মের নামে কোন
ভেদাভেদ কোন অশান্তি
মানিনা মোরা ধর্মের নামে
কোন রাজনীতি,
যার যার ধর্ম তারতার কাছে
আলকুরানের বাণী।
তবুও কেন ভাই ধর্মের নামে
এত হানাহানি?
হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম খ্রিষ্টান
আছে যত ধর্মপ্রাণ
সবাইকে দিয়েছে সমঅধিকার
আমাদের সংবিধান।
সবাই মিলে যুদ্ধ করে
এনেছি স্বাধীনতা,
উন্নয়নের ডাক
দিয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।
উন্নয়ন মানে গণতন্ত্র
গণতন্ত্র মানে উন্নয়ন,
মানবতার মহান নেত্রী
আমাদেরই দুই নয়ন।
দেশগড়িতে তথ্যপ্রযুক্তির
নেইযে কোন-বি-কল্প
ঘোষিত হয়েছে উন্নয়নের
যাদুকরী রূপকল্প,
একে একেসব দৃশ্যমান হল
এখন নয় আর গল্প।
মেট্রো আর পাতাল রেল
সেতু উড়াল-পদ্মা
একটি বাড়ি একটি খামার
দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
অন্ধকারে ছিল যে দেশ
বিদ্যুৎ বিহীন খাম্বা,
আলোকিত দেশ
আলোর দ্যোতিতে
শত ভাগগ্রাম বাংলা।
তোমার হাতেই উন্নত দেশ
তোমার হাতেই স্বাধীনতা
মানবতার মহান নেত্রী
দেশরত্ন শেখ হাসিনা।

সুতরাং রাজনৈতিক দলের উচিৎ বিশ্বস্ত কর্মী খুঁজা
নিরপেক্ষ আমজনতার যে তত্ত্বটি বিশেষ করে আওয়ামীলীগ মেনে চলে তা মোটেও দলের জন্য গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা—বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ কোন না কোন রাজনৈতিক আদর্শ বিশ্বাস করে–আওয়ামীলীগ,বিএনপি, জামাত,বাম,হেফাজত ইসলাম,জাপা,ইসলামি ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিশ, ঐক্যফোরাম,কল্যাণ পার্টি,সর্বহারা, বাস্তুহারা, চরমোনাই,জাকের পার্টি,কওমি, ওয়াবী,সুন্নি–সহ অনেক ধরণের পার্টি রয়েছে এদেশে!প্রতিটি মানুষ কোন না কোন দলের কর্মী, সমর্থক—তাই আমজনতা বা জনগণের সরকার কিংবা বা আব্রাহাম লিংকনের সেই ঐতিহাসিক সঙ্ঘা জনগণের দ্বারা জনগণের জন্য জনগণের সরকার–এটা কেবলই পুঁথিগত, বাস্তবে কতটা সঠিক তা বিচার্য বিষয়—
একটি দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকেরাই হচ্ছে দলের প্রাণ অথবা মেরুদণ্ড। যে দলের নেতা-কর্মীরা বিচক্ষণ, শক্তিশালী, দলের জন্য নিবেদিত—তারাই প্রাধান্য বিস্তার করে নানান কৌশলে দলকে ক্ষমতাসীন করবে এটাই রাজনীতির পরা বাস্তবতা। বিগত ১৩/১৪ বছর ধরে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলেও দলটি তার নিবেদিত প্রাণ নেতা-কর্মী-সমর্থকদের দিকে ফিরেও তাকায়নি।কেবল তথাকথিত আমজনতার সেবা করে যাচ্ছে,আশ্রয়ণ,গৃহায়ণ দিয়ে যাচ্ছেন ছিন্নমূল মানুষকে,কভিড-১৯ দক্ষ হাতে মোকাবিলা করার জন্য ব্যাপক টিকা কার্যক্রম করেছে এখানেও কিন্তু উল্লিখিত তথাকথিত আমজনতা কেহই এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়নি।বরং উল্লিখিত জনকল্যাণকর কাজের প্রশংসা থেকে সমালচনাই বেশি পেয়েছে সরকার।তবুও কিন্তু সরকার নিজেকে দলীয় সরকার হিসাবে পরিচিত করতে চায়নি,চেয়েছেন জনগণের সরকার হিসাবে পরিচিত হতে।অথচ তথাকথিত মানবাধিকারী রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন তাদের দেশের দলীয় প্রশাসন নিয়ে ক্ষমতা পরিচালনা করে,বাইডেন যখন ক্ষমতায় আসল তখন তিনি কয়েক লক্ষ নিজ দলের অনুগত স্টাফ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন,কিন্তু বাংলাদেশে সরকার প্রতিটি সেক্টরে আওয়ামীলীগ সরকারের বিরোধী জনবল নিয়ে চলছে, সরকার বিরোধীরা সবসময় স্যাবুটাজ করতে পারঙ্গম যা সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি করে।
উপমহাদেশে বিশেষ করে এই অকৃতজ্ঞ জাতির দেশে কাজ বা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া খুবই কঠিন, তাই বলে কিন্তু বর্তমান সরকার উন্নয়ন করতে কোন প্রকার আঞ্চলিক বৈষম্য বা দলীয়করণ না করেই সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চাচ্ছে ।
আজকে যাদেরকে ঘর দেয়া হল তারাই কিন্তু ইলেকশন আসলে আগে বিট্রে করবে,কারণ মানুষ তার উপকারককে ভুলে যায়,তাকে ইলেকশন আসলে কেউ যদি কানেকানে বলে দেয় যে তোমাকে কম দিয়েছে আরও দেয়ার কথা ছিল,আওয়ামীলীগের লোকজন খেয়ে ফেলেছে কিংবা অন্যদল ক্ষমতায় এলে আরও বেশি দেয়া হবে তাহলে ভুলে যাবে অতীত, ভোট দিবে অন্য জায়গায়।তাই যে কোন দলকে তার বিশ্বস্ত নেতা কর্মীর কাঁধে বা মেরুদণ্ডে ভর করেই ক্ষমতায় আসতে হবে বিশেষ কোন গোষ্ঠী বা বিদেশী প্রভুর উপর নির্ভর করে নয়–আগামী নির্বাচনে যে দলের নেতা-কর্মীরা দলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে তারাই ক্ষমতায় যাবে,কিন্তু বিগত বছরগুলিতে আওয়ামীলীগ তার দলের মূল শক্তি সেই বিশ্বস্ত ডেডিকেটেড নেতা-কর্মীদের তোরাই খুঁজখবর নিয়েছে যার ফলে সকলেই ঝিমিয়ে পড়েছে।দলের ভিতর আছে শুধু হাইব্রিড, সুবিধাবাদী যারা গোপনে অন্যদলের নেতা-কর্মীদের সাথেও আঁতাত রাখে,এরা স্রোতে ভাসে,যে দিকে স্রোত বয়ে যায় সে দিকেই যায়।প্রশাসনের উপর কখনো নির্ভর করা উচিৎ নয়,২০০১সালের নির্বাচনই তার প্রমাণ, আওয়ামীলীগ এর রেখে যাওয়া সব–সেনা,পুলিশ, নির্বাচনকমিশন, সচিব,ডিসি–আহারে এক রাত্রেই সব উড়িয়ে দিয়ে জামাত-বিএনপিকে প্রায় ভূমিধ্বস বিজয় এনে দিল,সেই আগামব্যালট বা ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং যার কাছে পরাজিত হল দেশের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আওয়ামীলীগ, কয়–?কাজের কথাতো ভুলে গেল আমজনতা, টাকা আর মাসল পাওয়ারের কাছে সব ভেসে গেল।
তাহলে আগামী নির্বাচনে বিএনপি কিসের বলে ক্ষমতার স্বপ্ন দেখে–দলের অতীত কর্মকাণ্ড সকলেই জানে,এমন কোন সুকীর্তি নেই যা সামনে রেখে জনগণের কাছে ভোট চায়তে পারে।দলের চেয়ারপার্সন দণ্ডীত,সেকেন্ড ইন কমান্ড সাজা মাথায় নিয়ে ফেরারি হয়ে আছে,বিগত ১৩/১৪বছর জনগণের পাশেই দাঁড়ায়নি কেবল তাদের প্রধান নেতার মুক্তি আর চিকিৎসার দাবি ছাড়া।দলটি এখন চায়বে আওয়ামী বিরোধী সকলকে একত্রিত করতে কিংবা ধর্মীয় কোন মেরুকরণ কিংবা নতুন কোন প্রোপাগান্ডা যা ইতোমধ্যে লক্ষ্য করা গেছে যেমন দেশ দেউলিয়া হয়ে যাবে,শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে ইত্যাদি ছাড়া আর তেমন কোন উপায় কি আছে–হ্যাঁ দলটির অনেক সম্পদ আছে যেমন, ব্যাপক আওয়ামী বিরোধী শক্তি,দলে আছে প্রচুর পরিমাণে ডেডিকেটেড নেতা-কর্মী,বিগত সময় যখন ক্ষমতায় ছিল তখন ব্যাপক দলীয়করণ করা সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারী যারা এখনো তাদের দলের প্রতি কৃতজ্ঞ, আছে জামাতের ফাইন্যান্স ক্ষমতা,উগ্রধর্মীয় গোষ্ঠী ইত্যাদি নানা মুখী শক্তিকে যদি একত্র করতে পারে তবে আগামী নির্বাচনে ব্যাপক ঝাঁকুনি দিবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
তাহলে আওয়ামীলীগ দেশের এত উন্নয়ন করল,এত এত মহৎ কর্ম করে কেন নির্বাচনে সংকটে পড়তে পারে–সংকটের অন্যতম কারণ হচ্ছে দলে এখন পরিক্ষিত নেতা কর্মীর সংকট,ডেডিকেটেড নেতা-কর্মীরা প্রায়ই বিলুপ্ত, হাইব্রিড বর্ণচোরা নেতা-কর্মীদের উপর নির্ভর করলে সংকটে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা —এখন দলটির উচিৎ তার ডেডিকেটেড সেই নেতা-কর্মীদের খুঁজ নেয়া,তাদের অভিমান ভাঙ্গানো, যদি ব্যর্থ হয় তবে সকল উন্নয়ন বুমেরাং হয়ে যেতে পারে!অন্যদিকে দেশের প্রকৃতি সবসময় বিএনপির অনুকূলে থাকে অর্থাৎ তাদের কথা মানুষ খুব সহজেই বিশ্বাস করে দীর্ঘ ২১বছর মানুষ তাদের কথা বিশ্বাস করে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতার বাইরে রেখেছিল,তাই আবার যদি কোন জুজুরভয় দিয়ে জনগণকে করতে পারে জয় তবেই ক্ষমতায় যাওয়া ত্বরান্বিত হবে কারণ তাদের আছে বিশাল কর্মী বাহিনী ও প্রচুর অর্থ!
গতবছর বিএনপি নেতা জনাব আমান উল্লাহ আমান এক আজগুবি ঘোষণা দিল যে ১০ ডিসেম্বরের পর দেশ চলবে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়ার কথায়–এতে মানুষ নড়েচড়ে বসল, গুজবের নতুন ডালপালা মেলতে থাকল,জল্পনা-কল্পনা চলতে থাকল।
২৭ বছরের কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে কি তারেক জিয়া সাহেব দেশে আসছেন?এমন খবর প্রচার করতে লাগল দলের নেতা-কর্মীরা যে,তারেক জিয়া আসছেন,কত গান গীত রচনা করতে লাগল তারা,হ্যাঁ একজন নেতার উচিৎ পলাতক না থেকে তাকে দেশে এসে  বিএনপি তাদের নেতা-কর্মীকে চাঙ্গা করা,আইনের মাধ্যমে নিজেকে বিভিন্ন অভিযোগ মোকাবেলা করে নির্দোষ প্রমাণ করা,কিন্তু দলটি এই প্রধান নেতা কি সেটা পেরেছেন? না,পারেননি,তিনি বিভিন্ন ভিডিও বার্তা দিয়ে দলের নেতা-কর্মীকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন,সেই সাথে আন্তর্জাতিক ভাবে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রকারী লবিং মেইন্টেইন করে চাচ্ছেন এই সরকারকে ফেলে দিতে।এই  জন্য আরও চমকপ্রদ গুজব নিয়ে হাজির হচ্ছে দলটির হাইকমান্ড–যেমন স্যাংশনের গুজব বেশ আলোড়ন তুলেছিল,অথচ স্যাংশন যুক্তরাষ্ট্র কাকে দিবে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে যারা গণতন্ত্রকে বাঁধাগ্রস্ত করবে অর্থাৎ সংবিধান অনুসারে নির্বাচনে বাঁধা দিবে,জ্বালাওপোড়াও করবে তারা স্যাংশন এর আওতায় পড়বে।
নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে নিত্যনতুন গুজব হাজির করছে একটা রাজনৈতি জোট।
অতিসম্প্রতি শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. ইউনুস সাহেবকে নিয়ে বিশ্বের বিশ্বের ১০১ জন সাবেক নোবেল জয়ী ব্যক্তি এবং প্রভাবশালী রাষ্ট্রের সাবেক রাষ্টপতিরা বিবৃতি দিল কিন্তু তারা কি জানতনা যে একজন অপরাধী যতই নোবেল পাক আইনের দৃষ্টিতে তিনি অপরাধ করলে বিচারের কাঠগড়ায় আদসতে হবে।তারা পরে জেনেছেন যে ড. ইউনুস গ্রামীন ব্যাংকের শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা না দিয়ে আত্মসাতের মামলায় অভিযুক্ত, কর ফাঁকির মামলায় অভিযুক্ত! পশ্চিমাদেরকে ডোনেশন দিলেই,ফি দিলেই তারা তাদের মক্কেলদের পক্ষে বিবৃতি প্রদান করে,আর তাতেই দেশে একদল মানুষ রি রি করে উঠল, এই সরকার শেষ হয়ে যাচ্ছে,সেটাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ড আর দেশপ্রেমের কাছে পরাস্ত হল।গত ২৮ ডিসেম্বর ঘটে গেল গুজবের আরও এক ড্রামা যা বিএনপি জামাত জোটের গুজবকে গোয়েবলসীয় গুজবকেও হার মানিয়ে দিল–মিয়ান আরাফি নামক এক মার্কিন নাগরিককে বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টা বানিয়ে তাদের দলীয় কার্যালয়ে এনে সরকারকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম নাটক মঞ্চস্থ করে বাংলাদেশ পুলশ বাহিনীর একদল চৌকশ দেশপ্রেমিক পুলিশের কাছে ধরা পড়ে গেল আর তাদের গুজবের পরম্পরার কদর্যরূপ জনগণের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠল।যে কোন দলের ক্ষমতায় যেতে হলে দেশের উন্নয়ন করতে হবে,গুজব ছড়িয়ে কেউ আর ক্ষমতায় যেতে পারবে না—
আব্রাহাম লিংকনের বিখ্যাত উক্তিটি দিয়েই আজকের আলোচনা শেষ করতে চাই–
“You can fool some of the people all of the time, and all of the people some of the time, but you can not fool all of the people all of the time.”
লেখক: কবি,অর্থনীতির অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু গবেষক এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।

 

প্রতিদিনের কাগজ

 

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |